প্রথমবারের মতো বারোমাসি কারিশমা জাতের তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন এক শিক্ষিত যুবক। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা তরমুজের বাম্পার ফলনে খুশি তিনি। কৃষিবিভাগ বলছে তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকে এবং তাদেরকে সহায়তা করা হচ্ছে।
কৃষক, স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষি অফিস জানায়, বারোমাসি কারিশমা জাতের তরমুজ জামালপুরের সরিষবাড়ী উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন সাতপোয়া গ্রামের আব্দুল আলীম সবুজ সরকার। বেকারত্ব দূর করতে সরিষাবাড়ী কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ১০ শতাংশ জমিতে বারোমাসি কারিশমা তরমুজ চাষ করেছেন।
মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। ইতিমধ্যে অর্ধলক্ষাধিক টাকা বিক্রিও করেছেন। আরো দেড় লক্ষাধিক টাকার তরমুজ বিক্রি করার আশা করছেন। এর আগে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষও করেছেন সবুজ।
কৃষি উপসহকারী শরীফুল ইসলাম লিটনের পরামর্শে বেশি লাভের আশায় প্রথমবারের মতো আবাদ করেছেন তরমুজ। ভাল ফলনের কথা জানান কৃষক সবুজ সরকার। চারা তৈরি থেকে ফল বিক্রি পযর্ন্ত সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলার প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষে তার সাফল্যের খবরে মানুষ দেখতে আসছেন তরমুজের ক্ষেত সাথে করে টাটকা তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন জায়গা থেকে আগতরা। এদের মধ্যে অনেকেই কৃষি অফিস ও সবুজের কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়ে তরমুজ চাষ করার কথাও জানান।
স্থানীয় মাসুম মিয়া জানান, এই তরমুজ চাষটি প্রথমবারের মতো দেখার জন্য করা হয়েছে। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো ভাল ফলন হবে না। কিন্তু এই মাটিতে আশানুরুপের চেয়ে অনেক বেশি ভাল ফলন হয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, আমরা দেখছি ভালো ফলন হয়েছে সেই সাথে ফলের মিষ্টতাও বেশি। আমরাও কৃষি অফিসের সহযোগিতায় তরমুজ চাষ করবো।
কৃষক সবুজ সরকার জানান, আমি কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এই প্রথম তরমুজ চাষ করেছি। আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে বেশি পরিমাণে ফলন উৎপাদন করা সম্ভব। যেহেতু আমি নতুন তারপরও আল্লাহ্ তাআলার রহমতে অনেকটা ভালো হয়েছে।
কৃষি অফিস আমাকে অনেক সহযোগিতা করায় ভাল ফলনের মুখ দেখছি। আমার দেখাদেখি এলাকাবাসী, পাশ্ববর্তী কৃষকরা তরমুজ চাষ করার জন্য জমি তৈরি করা শুরু করছে। আমার ৩৫ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়। এ থেকে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারবো।
সার্বক্ষনিক পর্যলোচনাকারী উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী শরীফুল ইসলাম লিটন জানান, সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া গ্রামের সবুজ তরুণ উদ্যোক্তা, সবজি চাষে খুব আগ্রহী ছিল।
তাকে তরমুজ চাষে পরামর্শ দিলে সবুজ তরমুজ চাষ শুরু করে। চারা তৈরি থেকেই কৃষি অফিস থেকে আমরা নিবিড় পরিচর্যা করছি, আশা যা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি ভাল ফলন হয়েছে। আশে পাশের কৃষকরাও আবাদ বৃদ্ধি করার আগ্রহ দেখাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপ সিংহ জানান, এটা উচ্চ মূল্যের অর্থকরী ফসল। আমরা কৃষকদের কারিগরি, উপকরণ সহায়তা দিচ্ছি, সেই সাথে কৃষকদের উৎসাহিত করছি তরমুজ চাষের জন্য। তরমুজ চাষের ফলে অন্য এলাকার তরমুজের উপর নিভর্রশীলতাও কমে যাবে। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে ।
বারোমাসি তরমুজ চাষের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর ও কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় লাভজনক এ চাষ আরও বাড়াতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কারিগরিসহ সব ধরনের সহায়তা দেয়ার কথা জানান বেকার যুবকরা।
টিএইচ